মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করছে জাপা!
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকে পদত্যাগের আভাস দিয়েছেন খোদ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই। মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত (মন্ত্রী মর্যাদায়)পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। এরপর মন্ত্রিসভায় থাকা জাতীয় পার্টির সদস্যদের পদত্যাগের নির্দেশ দেবেন বলে জানিয়েছে দলীয় দল।
সোমবার (৩১ আগস্ট) খুবই গোপনীয়তায় বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের কক্ষে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।
তবে বৈঠকে মন্ত্রিসভায় থাকা জাতীয় পার্টির ৩ মন্ত্রী (পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু) উপস্থিত ছিলেন না। একই সময়ে কেবিনেট মিটিং থাকায় আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মসিউর রহমান রাঙ্গা কেবিনেটে যোগ দেন। আর মুজিবুল হক চুন্নু রয়েছেন দেশের বাইরে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক এমপি বাংলানিউজকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, বৈঠকে রওশন এরশাদই প্রথম মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের বিষয়ে কথা বলেন। জবাবে এরশাদ সেখানে বলেন, ‘আমিও পদত্যাগ কবর। আমি আগে পদত্যাগ করি, তারপর অন্যরা করুক’।
তবে জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে আলোচনার প্রস্তাব দেন বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোন দিয়েও জাতীয় পার্টির মহাসচিবকে পাওয়া যায়নি।
প্রেসিডিয়াম সদস্য একেএম মাঈদুল ইসলাম বলেন, খুবই কনফিডেন্সিয়াল বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আগেও চলতি বছরের শুরুতে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিলো। বৈঠকের পর এরশাদ এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, আমি চাই জাতীয় পার্টির সদস্যরা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করুক। এরশাদের ওই বক্তব্যে একজন মন্ত্রী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। আরেকজন সংসদ সদস্য মিডিয়াকে বলেছিলেন, উনি তো (এরশাদ) মন্ত্রি পদমর্যাদায় দূত হিসেবে আছেন। আগে তার নিজের পদত্যাগ করা উচিত।
একই সঙ্গে সরকার ও বিরোধীদলে থাকা নিয়ে জাতীয় পার্টির কঠোর সমালোচনা রয়েছে। একইভাবে দলের ভেতরেও রয়েছে প্রবল বিরোধিতা। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে দু’টি গ্রুপও সক্রিয়। তবে বিরোধী পক্ষের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে বলে জাতীয় পার্টি সূত্র জানিয়েছে।
মন্ত্রিসভায় যোগদানের প্রশ্নে এরশাদ ও রওশন এরশাদের মধ্যে শুরু থেকেই মতপার্থক্য ছিল। এরশাদ মন্ত্রিসভায় যোগদানের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু রওশন এরশাদ ও তার অনুসারিদের কাছে হার মানতে হয় খোদ পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদকে।
তবে সম্প্রতি একই সুরে কথা বলছেন এরশাদ ও রওশন এরশাদ। জাতীয় পার্টি কার্যকর বিরোধীদল হিসেবে ভূমিকা রাখতে চায় বলে বক্তব্য দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার অধিবেশনে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ওয়াকআউট করে জাতীয় পার্টি।
প্রতিক্ষন/এডমি/এফজে